Tuesday, September 5, 2017

ওভারশুট ডে



শোচনীয় সিচুয়েশানে শ্যামবাজারের শ্যামলা


বলল হেঁকে “আর পারিনে, এবার তোরা সামলা।


মরবি তোরা মরবি এবার, এবার পাবি অক্কা


সারা বছরের রসদ তোদের আগাস্ট মাসেই ফক্কা?



এই গ্রহ যা দিতে পারে এক বছরের খাবার


খিদে তোদের এতই যে সব আগাস্ট মাসেই সাবাড়?


তেল পোড়ানো কমাতে হবে যতই বলি তোদের


শুনবি না গরিবের কথা। দেখ ফলাফল জেদের –


এক শতাব্দীতে মানুষ ডাবল কিন্তু বলে রাখি


আটান্ন পার্সেন্ট হয়েছে মাছ আর পশু পাখি


বৃষ্টিবাদলা কমছে ক্রমেই চেঞ্জ হচ্ছে ক্লাইমেট


এ চললে ঠিক লোপ পাবে সব মানুষ, বাঁদর, প্রাইমেটস



আমিষ খাওয়া কমা, তোরা তেল পোড়ানো কমা


নয়তো আর এক শতক শেষে কাঁদবি “ছেড়ে দে মা”


বাঁচতে চাস তো কন্ট্রোল কর কার্বন এমিশান


নয়তো এ রেলগাড়ি পৌঁছবে শেষের ইস্টিশান


এই পৃথিবী বাঁচাবো আমরা – আয়নার সামনে


প্রতিজ্ঞা কর। আজ বছরের ওভারশুট ডে”



★★★



সব শুনেটুনে বলল সবাই লোকটা বোধ হয় পাগল


নয় মাওয়িস্ট নয়তো নেতা কিম্বা নিছক গাড়োল



“Living within the means of one planet is technologically possible, financially beneficial, and our only chance for a prosperous future”



We used all resources that we will be able to replenish throughout the year by August 2, this year. August 2 is the overshoot day for this year.



https://www.cnbc.com/2017/08/02/its-earth-overshoot-day-weve-used-more-resources-than-nature-can-regenerate-in-2017.html

Tuesday, August 8, 2017

কলকাতায় ভেনিস



ঘুমের মধ্যে বললেন এসে হরি
“এবার তোমায় যেতে হবে। চলো হে তাড়াতাড়ি”
আমি বললাম “হে প্রভু আপনার পায়ে পড়ি
আমায় কেন যেতে হবে এখুনি যমের বাড়ি?
কি দোষ আমার? আমি কি চুরি করি?
নাকি আমি election লড়ি?
নাকি আমার খাটের তলায় হাজার টাকার নোটের ছড়াছড়ি?
যদি কোনো মেয়ের জন্যও শপিং করি সেও তো আমার বৌ নয় শ্বাশুড়ি।
আমি তো বিনয়ী শান্ত, আমার নয়তো পায়াভারি
দোষের মধ্যে যা একটু মেয়েদের ঝারি মারি
তাও যদি সে হয় ডানা-কাটা পরী
– এগুলো তো কোনো দোষ নয় আহামরি।
তা…আমি এই কান মলছি আমায় ছেড়ে দিন মাইরি
আমি সামান্য মানুষ, আমি আদার ব্যাপারি
কেন আমায় গোটাতে হবে পাততাড়ি
সাততাড়াতাড়ি?
কি দোষে শেষ station-এ আমার রেলগাড়ি?
কতো লোকের কেচ্ছা কাহিনী অগণ্য। কাঁড়ি কাঁড়ি।
কতো লোকের কোটি টাকার চোরাকারবারি
গরীবের রক্ত খায় আর করে মন্ত্রীর তাঁবেদারি
তবে কেন যাবার সময় হল শুধু আমারই?”

স্মিত হেসে বললেন পদ্মনাভ হরি
“আমার কাজ তো পালন, পাগলা, আমি থোড়ি না মারি
তোর জন্য এনেছি দেখ mercedes গাড়ি
চল তোতে-আমাতে ঘুরে আসি টালিগঞ্জ ফাঁড়ি
প্রয়োজনে এই গাড়ি হতে পারে submarine – ডুবুরি
বর্ষায় ভীষণ ভিজে কলকাতা এখন vintage ভেনিস নগরী
জমা জল নিয়ে নেতারা খেলুক চু কিত কিত, হোক আম্পায়ার রেফারী
তুই রেডি হয়ে নে। ডোন্ট ডু দেরী।
তোতে আমাতে করে আসি চল বন্যা সাফারি”  :-) :-)  

জরুরি অবস্থা


সকাল থেকে জরুরি অবস্থা ঘোষনা করা হয়েছে। পথ ঘাটে অবস্থা ভাল না। মাঝে মাঝেই বিপক্ষ সৈনিকের ভারি বুটের টহলদারির আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। হাতে সেই মোক্ষম অস্ত্র। লোহার শেকলের মত তার ধাতব শব্দ শুনলে বাঘা বাঘা ডাকাবুকো কমরেডদেরও হৃৎকম্প হয়। রৌনক ঘরে খিল দিয়ে ঘাপটি মেরে পড়ে আছে। ফেসবুকে হোয়াটস-আপে বিভিন্ন কমরেড বন্ধুদের ধরা পড়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। রক্তের অক্ষরে লেখা হচ্ছে এক একটি নাম। মাঝে মাঝেই অন্য পক্ষের সৈনিকেরা বিভিন্ন দড়জায় নাড়া দিয়ে দেখে যাচ্ছে কেউ ছাড়া পেয়ে গেল না তো। রৌনক দুরু দুরু বুকে ইষ্টনাম জপ করতে থাকে “ভগবান, এ যাত্রায় আমায় বাঁচিয়ে দাও। পুরো আগামী বছর কারও দিকে মুখ তুলে তাকাব না। মা কালির দিব্যি!!!” ঘড়ির কাঁটা বলছে সন্ধে আটটা। আরও ঘণ্টাচারেক চলবে বিপক্ষের কুচকাওয়াজ। এই সময়টুকু underground থাকতে পারলে তবেই এ যাত্রায় পার পাবে রৌনক…..


★★★


আজ রাখী পূর্ণিমা…

Wednesday, August 2, 2017

স্ব-বাবু মহারাজ যযাতিকে জিজ্ঞাসা করলেন, “মহারাজ এই যে দিন-রাত অনবরত সকলের মুখে একটাই শব্দ শুনতে পাচ্ছি। “সেল্ফি”। এটি কি রূপ? এটি খায় না অঙ্গে মর্দন করে?”
মহারাজ যযাতি বললেন –
উত্তম প্রশ্ন বৎস। খুবই রুচিকর আর আকর্ষণীয় এই বস্তু। ইহার পেছনে ইতিহাসও অতি মনোরঞ্জক। ধরাধামে কলিকালে এক ধরনের প্রাণির উদ্ভব হয়েছে যারা নিজেদের মানুষ বলে দাবি করে। আকৃতিগত ভাবে মানুষদের সাথে সাদৃশ্য থাকলেও বাকি সকলই ভীষণরকম বিসদৃশ। আসল মানুষ যেখানে ফুল, পাখি, গাছ, পাহাড়, নদী দেখতে ভালবাসত এই মনুষ্য-সদৃশ জীব শুধু নিজেদেরই দেখতে ভালোবাসে। আমার অনুমান এরা বেদান্তের “আত্মানং বিদ্ধি” অর্থাৎ “নিজেকে জানো” এই মহান শ্লোকটির অনুসারি। তাই এরা নিজেকে জানার প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে বিভিন্ন ভাবে, বিভিন্ন কোণ থেকে, বিভিন্ন আঙ্গিকে নিজেকে দেখতে উৎসাহী। এই নতুন প্রজাতির মানুষকে উত্তরমানব বা প্রায়-মানব বলা হয়। নিজেকে জানার এই ইচ্ছা এদের মধ্যে ক্রমে ক্রমে প্রবল থেকে প্রবলতর এবং অনধিক্রম্য হয়। প্রথম প্রথম এরা নিজেকে দেখার সাধ পুর্ণ করতে চিত্রকরকে দিয়ে নিজেদের চিত্রিত করাতো। অর্থাৎ নিজের ছবি আঁকাত। কিন্তু সে অতি সময় সাপেক্ষ ও ব্যায়-বহুল বলে বেশিরভাগ প্রায়-মানবকেই আয়ানায় নিজের মুখ দেখেই সন্তুষ্ট থাকতে হত। পরে এরা এদের উর্বর মস্তিষ্ক খাটিয়ে এক ধরনের যন্ত্র আবিষ্কার করে ফেলে যার নাম “চিত্র বন্দি যন্ত্র”। অর্থাৎ এটা এক ধরণের ছবি ধরার ফাঁদ। এই অত্যাশ্চর্য যন্ত্রের সাহায্যে যে কোন দৃশ্যকে ফাঁদে ফেলে বাক্স-বন্দি করা যায়। কোন কিছুর দিকে এই যন্ত্র তাক করে একটি বোতাম টিপলেই ব্যাস। সুড় সুড় করে সে দৃশ্য এসে বাক্সের মধ্যে ঢুকে যাবে, সাথে সাথে বাক্সের দরজা বন্ধ আর ছবি বাক্স-বন্দি। সে ছবি তখন বাক্সের মধ্যে যতই ত্রাহি ত্রাহি চিৎকার করুক না কেন, বাক্স থেকে বেরোনর কোন পথ নেই।
কোন কিছুর দিকে এই যন্ত্র তাক করে একটি বোতাম টিপলেই ব্যাস। সুড় সুড় করে সে দৃশ্য এসে বাক্সের মধ্যে ঢুকে যাবে, সাথে সাথে বাক্সের দরজা বন্ধ আর ছবি বাক্স-বন্দি। সে ছবি তখন বাক্সের মধ্যে যতই ত্রাহি ত্রাহি চিৎকার করুক না কেন, বাক্স থেকে বেরোনর কোন পথ নেই।
কিন্তু প্রথম প্রথম সে যন্ত্র আয়তনে বৃহৎ হওয়ায় নিজের দিকে তাক করে বোতাম টেপার সুবিধে হত না। তখন সাগরে, পাহাড়ে জাদুঘরে, বাজারে সর্বত্র যেকোন চেনা-অচেনা-অর্ধচেনা লোক দেখলেই এই প্রায়-মানবদের বলতে শোনা যেত “দাদা, আমার একটা ছবি তুলে দিন না” বলে তার অনুমতির অপেক্ষা না করেই সেই ছবি বন্দি করার কলটা তার হাতে তুলে দিয়ে হাসিমুখে, ঘাড় বেঁকিয়ে বিভিন্ন নৃত্য বিভঙ্গে দাঁড়িয়ে পড়ত। এই ভাবেই কিছুকাল ধরে এরা নিজেকে দেখার এবং জানার তৃষ্ণা মেটাচ্ছিল। কিন্তু অপরের সাহায্যের প্রয়োজন থাকায় সর্বতোভাবে নিজেকে জানতে পারছিল না অর্থাৎ যথেস্ট পরিমাণে নিজের ছবি তুলতে পারছিল না এবং তদহেতু অবসাদে ভুগছিল। ক্রমে ক্রমে এই যন্ত্র ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর হয়ে একটি আঙ্গুর ফলের মত ছোট হল। এবং প্রায়-মানবদের আর এক আবিষ্কার দুরভাস যন্ত্রের মধ্যে স্থান পেল। তখন ঐ যন্ত্র নিজের দিকে তাক করেও নিজের চিত্র বাক্স-বন্দি করা সম্ভব হল। তখন প্রায়-মানবেরা সর্বপ্রকারে নিজেকে জানতে প্রয়াসী হল। সময়-অসময়, সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্নায় এরা নিজেদের পানে ঐ যন্ত্র তাক করে নিজেদের ছবি তুলতে লাগল। ইহাই “সেল্ফি”। অন্যের সাহায্য ব্যাতিরেকে নিজের স্বরুপ উদঘাটন করতে পেরে ইহাদের আনন্দের অবধি থাকল না। তখন মন্ত্রিমশাই থেকে মুচি-কসাই, টাটা-বিড়লা থেকে গরিব চা-ওয়ালা, রাজনীতিকার থেকে চোর পকেটমার, রাজা-গজা থেকে ভুমিহার প্রজা, কেস্ট-বিস্টু থেকে পটল, কেয়া, মিস্টু সকলেই ঘুমনোর সময়টুকু ছাড়া সর্বক্ষন সেল্ফি তুলতে থাকল।
তখন মন্ত্রিমশাই থেকে মুচি-কসাই, টাটা-বিড়লা থেকে গরিব চা-ওয়ালা, রাজনীতিকার থেকে চোর পকেটমার, রাজা-গজা থেকে ভুমিহার প্রজা, কেস্ট-বিস্টু থেকে পটল, কেয়া, মিস্টু সকলেই ঘুমনোর সময়টুকু ছাড়া সর্বক্ষন সেল্ফি তুলতে থাকল।
এমনকি কিছু কিছু প্রায়-অতিমানব গতিমান ট্রেন-এর সামনে বা উঁচু ব্রিজের ওপরে দাঁড়িয়ে সেল্ফি দ্বারা নিজেকে জানার প্রয়াস করে হাসি মুখে প্রাণ বিসর্জন দিতেও পিছপা হল না। শুধু তাই নয়, ইহারা এই পর্বত প্রমাণ সেল্ফি বা নিজস্বি সকলকে ইহাদের আর একটি আবিষ্কার আন্তর্জালের মাধ্যমে মুহুর্তের মধ্যে মর্তলোকের সর্বত্র ছড়িয়ে দিয়ে একই সাথে এরা সকল ভুভাগে দৃশ্যমান হল। এবং এক ধরনের পারস্পরিক বোঝাপড়ায় সবাই একে অপরকে অপূর্ব সুন্দর কিম্বা সুন্দরী বলে বাহবা দিয়ে নিজেদের আত্মগরিমা পুনঃ পুনঃ উজ্জীবিত করতে থাকল। তখন প্রায়-মানবেরা স্বোহম অর্থাৎ “আমিই সেই ব্রহ্ম” সেই পরম বোধে উত্তীর্ণ হয়ে আত্মজ্ঞানী হল। সচ্চিদানন্দের কৃপায় সৎ অর্থাৎ নিজের অস্তিত্বকে জানান দিতে নিজের চিৎশক্তি অর্থাৎ ইচ্ছাশক্তির সহায়তায় সেল্ফি আবিষ্কার করে এই প্রায়-মানবেরা আনন্দ লাভ করল এবং অনন্ত-আনন্দ-কারণ-সাগরে নিমজ্জিত হল।

Wednesday, July 26, 2017

জন্মদিনে

জন্মদিনে ঘুম থেকে উঠে নিজেকে ঈশ্বর মনে হয়
বাথরুমে গিয়ে আয়নায় স্পষ্ট দেখতে পাই আমার মাথার পেছনে ঈশ্বরীয় হ্যালো
দু চোখের মাঝখানটা দগদগ করতে থাকে
এই বুঝি ফুটে উঠবে অনুভবী তৃতীয় চক্ষু
হাতটা নিজের অজান্তেই তথাস্তু মুদ্রা নেয় বার বার
ঠোঁটের কোনে লেগে থাকে ক্ষমাশীল স্মিত পরিশীলিত হাসি
রাস্তায় বেরোলেই দেখি রাশি রাশি রাঙা রঙ্গন ফুল ছড়ানো আছে অলিতে গলিতে বড়রাস্তায়
আমি ঘাস বাঁচিয়ে ফুল বাঁচিয়ে সাবধানে চলি
আজ যে আমার কাউকে পায়ের তলায় দলে যাওয়ার কথা নয়
আজ সে আসবে – সেই কিশলয় প্রভাতের অনুচ্ছিষ্ট আমি
আসবে সে তার সমস্ত সুষমা নিয়ে
বায়বিক থেকে মানবিক করবে আমায়
অননুভূত এক উন্মাদনা জড়িয়ে থাকে রোমকূপে রোমকূপে
অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করি সেই সহজপাঠ্য ভূতপূর্ব আমার
সকাল থেকে বিকেল গড়ায়, বিকেল থেকে সন্ধে…
এই বুঝি শিউলির গন্ধের মত নিবিড় হয়ে সে এসে
এক ঝটকায় আমার প্লাস্টিক পৃথিবীর বন্ধ দরজাগুলো খুলে দেবে
হাত ধরে টেনে নিয়ে গিয়ে আমায় সবুজ চেনাবে
অস্থির আবেগে প্রতিটা সেকেন্ডকে ঘন্টা মনে হয়
প্রতিটা ঘন্টাকে বছর
ধীরে সন্ধে পেরিয়ে রাত্রি হয়
তবু আমাদের মধ্যস্থিত যোজন আলোকবর্ষব্যাপী
নিঃসীম নিগাঢ় নিরালম্ব অন্ধকার ফিকে হয় না এতটুকু…
তবু আসেনা সেই বহু প্রতিক্ষিত আমার কিশলয় আমি
রাত ফুরোয়…শুরু হয় একটা সাদামাঠা আভাহীন প্রাত্যহিক দিন
শুরু হয় আবার বছরভরের প্রতীক্ষা।

ঝুলির বেড়াল

“নটে গাছটি কি মুড়োলো?
যযাতির ঝুলি কি ফুরলো?”
আমি বললাম – আসলে গল্প হল
ঝুলিটাতো খুলির মধ্যে ছিল
ঝুলির থেকে যেই মেনি বেড়াল বেরুল
অমনি একটা হুলো
চোখ মটকে দিল
সঙ্গে দিল রজনীগন্ধা ফু্লও
আর বলল “হ্যালো?
কেমন আছ? ভালো?”
আর বলল “হ্যালো?
কেমন আছ? ভালো?”
ব্যাস মেনি লজ্জা পেল
বলল “আ মোলো
এ তো দেখছি জ্বালিয়ে খেলো”
বলেই লাজুক মেনি গিয়ে আবার ঝুলিতে ঢুকল
কি গেড়ো বলো
চিরকালই যত নষ্টের মূল এই হুলোগুলো
নেই কোনো চালচুলো
নিয়ম কানুন কিসসু মানে না, মানে না কোনো রুলও
ধরতে গেলেই চোখে দেবে ধুলো
তবে উপায়? এ তো ভারি কেলো
হঠাৎ একদিন যযাতি উপায় বাতলালো
ঝুলির মেনি চাউনি-বান চালালো
ব্যাস। আনন্দেতে হুলো বেঘোরে প্রাণ হারাল
যযাতির ঝুলি আবার প্রসবী হল।

Friday, March 24, 2017

সেল্ফি স্বরূপ


স্ব-বাবু মহারাজ যযাতিকে জিজ্ঞাসা করলেন, “মহারাজ এই যে দিন-রাত অনবরত সকলের মুখে একটাই শব্দ শুনতে পাচ্ছি। "সেল্ফি"। এটি কি রূপ? এটি খায় না অঙ্গে মর্দন করে?"

মহারাজ যযাতি বললেন -

"উত্তম প্রশ্ন বৎস। খুবই রুচিকর আর আকর্ষণীয় এই বস্তু। ইহার পেছনে ইতিহাসও অতি মনোরঞ্জক। ধরাধামে কলিকালে এক ধরনের প্রাণির উদ্ভব হয়েছে যারা নিজেদের মানুষ বলে দাবি করে। আকৃতিগত ভাবে মানুষদের সাথে সাদৃশ্য থাকলেও বাকি সকলই ভীষণরকম বিসদৃশ। আসল মানুষ যেখানে ফুল, পাখি, গাছ, পাহাড়, নদী দেখতে ভালবাসত এই মনুষ্য-সদৃশ জীব শুধু নিজেদেরই দেখতে ভালোবাসে। আমার অনুমান এরা বেদান্তের “আত্মানং বিদ্ধি” অর্থাৎ “নিজেকে জানো” এই মহান শ্লোকটির অনুসারি। তাই এরা নিজেকে জানার প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে বিভিন্ন ভাবে, বিভিন্ন কোণ থেকে, বিভিন্ন আঙ্গিকে নিজেকে দেখতে উৎসাহী। এই নতুন প্রজাতির মানুষকে উত্তরমানব বা প্রায়-মানব বলা হয়। নিজেকে জানার এই ইচ্ছা এদের মধ্যে ক্রমে ক্রমে প্রবল থেকে প্রবলতর এবং অনধিক্রম্য হয়। প্রথম প্রথম এরা নিজেকে দেখার সাধ পুর্ণ করতে চিত্রকরকে দিয়ে নিজেদের চিত্রিত করাতো। অর্থাৎ নিজের ছবি আঁকাত। কিন্তু সে অতি সময় সাপেক্ষ ও ব্যায়-বহুল বলে বেশিরভাগ প্রায়-মানবকেই আয়ানায় নিজের মুখ দেখেই সন্তুষ্ট থাকতে হত। পরে এরা এদের উর্বর মস্তিষ্ক খাটিয়ে এক ধরনের যন্ত্র আবিষ্কার করে ফেলে যার নাম “চিত্র বন্দি যন্ত্র”। অর্থাৎ এটা এক ধরণের ছবি ধরার ফাঁদ। এই অত্যাশ্চর্য যন্ত্রের সাহায্যে যে কোন দৃশ্যকে ফাঁদে ফেলে বাক্স-বন্দি করা যায়। কোন কিছুর দিকে এই যন্ত্র তাক করে একটি বোতাম টিপলেই ব্যাস। সুড় সুড় করে সে দৃশ্য এসে বাক্সের মধ্যে ঢুকে যাবে, সাথে সাথে বাক্সের দরজা বন্ধ আর ছবি বাক্স-বন্দি। সে ছবি তখন বাক্সের মধ্যে যতই ত্রাহি ত্রাহি চিৎকার করুক না কেন, বাক্স থেকে বেরোনর কোন পথ নেই। কিন্তু প্রথম প্রথম সে যন্ত্র আয়তনে বৃহৎ হওয়ায় নিজের দিকে তাক করে বোতাম টেপার সুবিধে হত না। তখন সাগরে, পাহাড়ে জাদুঘরে, বাজারে সর্বত্র যেকোন চেনা-অচেনা-অর্ধচেনা লোক দেখলেই এই প্রায়-মানবদের বলতে শোনা যেত “দাদা, আমার একটা ছবি তুলে দিন না” বলে তার অনুমতির অপেক্ষা না করেই সেই ছবি বন্দি করার কলটা তার হাতে তুলে দিয়ে হাসিমুখে, ঘাড় বেঁকিয়ে বিভিন্ন নৃত্য বিভঙ্গে দাঁড়িয়ে পড়ত। এই ভাবেই কিছুকাল ধরে এরা নিজেকে দেখার এবং জানার তৃষ্ণা মেটাচ্ছিল। কিন্তু অপরের সাহায্যের প্রয়োজন থাকায় সর্বতোভাবে নিজেকে জানতে পারছিল না অর্থাৎ যথেস্ট পরিমাণে নিজের ছবি তুলতে পারছিল না এবং তদহেতু অবসাদে ভুগছিল। ক্রমে ক্রমে এই যন্ত্র ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর হয়ে একটি আঙ্গুর ফলের মত ছোট হল। এবং প্রায়-মানবদের আর এক আবিষ্কার দুরভাস যন্ত্রের মধ্যে স্থান পেল। তখন ঐ যন্ত্র নিজের দিকে তাক করেও নিজের চিত্র বাক্স-বন্দি করা সম্ভব হল। তখন প্রায়-মানবেরা সর্বপ্রকারে নিজেকে জানতে প্রয়াসী হল। সময়-অসময়, সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্নায় এরা নিজেদের পানে ঐ যন্ত্র তাক করে নিজেদের ছবি তুলতে লাগল। ইহাই "সেল্ফি"। অন্যের সাহায্য ব্যাতিরেকে নিজের স্বরুপ উদঘাটন করতে পেরে ইহাদের আনন্দের অবধি থাকল না। তখন মন্ত্রিমশাই থেকে মুচি-কসাই, টাটা-বিড়লা থেকে গরিব চা-ওয়ালা, রাজনীতিকার থেকে চোর পকেটমার, রাজা-গজা থেকে ভুমিহার প্রজা, কেস্ট-বিস্টু থেকে পটল, কেয়া, মিস্টু সকলেই ঘুমনোর সময়টুকু ছাড়া সর্বক্ষন সেল্ফি তুলতে থাকল। এমনকি কিছু কিছু প্রায়-অতিমানব গতিমান ট্রেন-এর সামনে বা উঁচু ব্রিজের ওপরে দাঁড়িয়ে সেল্ফি দ্বারা নিজেকে জানার প্রয়াস করে হাসি মুখে প্রাণ বিসর্জন দিতেও পিছপা হল না। শুধু তাই নয়, ইহারা এই পর্বত প্রমাণ সেল্ফি বা নিজস্বি সকলকে ইহাদের আর একটি আবিষ্কার আন্তর্জালের মাধ্যমে মুহুর্তের মধ্যে মর্তলোকের সর্বত্র ছড়িয়ে দিয়ে একই সাথে এরা সকল ভুভাগে দৃশ্যমান হল। এবং এক ধরনের পারস্পরিক বোঝাপড়ায় সবাই একে অপরকে অপূর্ব সুন্দর কিম্বা সুন্দরী বলে বাহবা দিয়ে নিজেদের আত্মগরিমা পুনঃ পুনঃ উজ্জীবিত করতে থাকল। তখন প্রায়-মানবেরা স্বোহম অর্থাৎ “আমিই সেই ব্রহ্ম” সেই পরম বোধে উত্তীর্ণ হয়ে আত্মজ্ঞানী হল। সচ্চিদানন্দের কৃপায় সৎ অর্থাৎ নিজের অস্তিত্বকে জানান দিতে নিজের চিৎশক্তি অর্থাৎ ইচ্ছাশক্তির সহায়তায় সেল্ফি আবিষ্কার করে এই প্রায়-মানবেরা আনন্দ লাভ করল এবং অনন্ত-আনন্দ-কারণ-সাগরে নিমজ্জিত হল।"

Wednesday, March 22, 2017



বিশ্বায়ান এসে কেড়ে নিয়ে গেছে সব রুপকথাদের। যা কিছু সুশীল, সুললিত, যা কিছু যত্নলালিত তার কঙ্কালের ওপরে দাঁড়িয়ে মুখোমুখি আমরা আর আমাদের অতৃপ্ত প্রেতাত্মারা। চোখে শুধু ঘৃণা, অবিমিশ্র ঘৃণা - বামেদের ডানেদের প্রতি, ডানেদের বামেদের প্রতি, বিশ্বাসীদের অবিশ্বাসীদের প্রতি, অবিশ্বাসীদের বিশ্বাসীদের প্রতি। ক্লান্ত নগর, তোমার ইঁট, কাঠ, সিমেন্টও বুঝি আমাদের থেকে বেশি প্রানবন্ত আজ। তারাও বুঝি উপহাস করে আমাদের এই মৃত অস্তিত্বকে।

Monday, March 20, 2017

বেয়াদব আওয়াজ

পাথর দিয়ে যত্ন করে বাঁধিয়েছি মনের ঘাট
রূপকথারা আসে না আর আজ
কান্না? সে তো মেয়েদের শোভা পায় -
এমনই শিখিয়েছে আমায় এই বেশ্যা সমাজ।

সামনে দিয়ে সোজা হেঁটে চলে গেলাম
যেন আমি “চির উন্নত শির”,
যেন আমি মিলিটারি “বুটের পরে বুট”
আমার উগ্র সুগন্ধে স্টেশানের বাতাস মদির।

"ক্যান ইউ প্লীজ হেল্প মী? আই নীড টু ইট"
এখন ভেসে আসছে অনেক দূর থেকে ...
খেতে পায় না? যত্ত রাবিশ...শালা বজ্জাতের দল
বাড়িতে গিয়েই পাউডার শুঁকবে প্রত্যেকে।

মাথার মধ্যে আর একটা আওয়াজ বলে
হয়ত পাউডার শুঁকবে কিন্তু খেতে বোধ হয় পায়না বারো মাস
হয়ত খেতে না পেয়েই ছোট্ট বয়সে
করেছিল পাউডার শোঁকার অভ্যাস।

খেতে পেলে কি স্টেশানের বাইরে দাঁড়িয়ে
শিকাগোর শীতে বরফ গলা হাওয়ার ঝাপ্টা নিত?
খেতে পেলে কি আমার মতো শুয়োরের বাচ্চার
কাছে মাথা নোয়াতো?

ট্রেনে এক সোনালি চুলের পেছনে বসে আলগোছে রূপপান করি
আর ফিদেল কাস্ত্রোর লেখার পাতা ওল্‌টাই
আওয়াজটাকে যে মারতে হবে। এখুনি মারা চাই।

Friday, March 17, 2017

শিরোধার্য দাড়ি


এই যে বড়দা, হ্যাঁ হ্যাঁ আপনাকেই বলছি, এই একটু উজ্জয়িনীর রাস্তাটা বাতলে দিতে পারেন?

আমিও সেই দিকেই যাচ্ছি। জুড়ে পড় ইচ্ছে হলে। গল্প করতে করতে যাওয়া যাবে। তা তুমি বাপু কিসের খোঁজে? ভোজ খেতে চলেছ নিশ্চয়ই? পাত পেড়ে খুব করে মন্ডা মিঠাই খেতে চাও? ওই ধান্দাতেই আজ সবাই ও মুখো।

আজ্ঞে না না। আমার বাপের জমিদারি আছে। খাওয়া পরার চিন্তা নেই। আমি যাচ্ছি গান শুনতে। শুনলাম মহাকবি কালিদাস নতুন বই লিখেছেন, কুমারসম্ভব নামে। তো সেই বই তিনদিন তিন রাত ধরে কবি নিজে গান গেয়ে শোনাবেন আর ঠিকঠাক রাজ কর্মচারির হাত ভেজাতে পারলে কবির ব্যক্তিগত সাক্ষাৎকারও পাওয়া যাবে। তা ভাবলাম যাই একটা অটোগ্রাফ নিয়ে আসি আর যদি কোনভাবে কবির সাথে যদি একটা সেল্ফি ম্যানেজ করতে পারি। আপনিও কি উজ্জয়িনী যাচ্ছেন?

হ্যাঁ আমিও সে উদ্দেশেই। কিন্তু উদ্দেশ্য এক নয়। ছোঁড়াটা নতুন লেখাটা কেমন লিখলে সেটা একটু নিজের কানেই শুনে বিচার করব বলে যাচ্ছি। তা তোমার কি করা হয়?

দাদা, ঐ যে বললাম বাপের জমিদারি। তাই করতে কিছুই হয় না। তাই লিখি। আমি কিঞ্চিত লেখক।

বটে? তুমিও লেখ। আজকাল দেখছি এঁদিপেঁদি গেঁড়ি গুগলি সবাই লিখছে। যাকগে যাক। তা এ ছোঁড়ার লেখা পড়েছ?

পড়েছি। মেঘদুতম আমার ভীষণ প্রিয়। রসোত্তীর্ণ লেখা। যেমন ভাষার বাঁধুনি, তেমনি মন্দাক্রান্তা ছন্দ, তেমনি ভাব। “কাঙ্খিতকান্তা বিরহগুরুণা স্বাধিকারপ্রমত্ত…”

ওই লেখাটার জন্য আমি ওকে অবিশ্যি দশে সাত দিতে পারি। এরোটিক রোমান্টিসম বিষয়টাকে ভালই এক্সপ্লোর করেছে। কিন্তু ছোঁড়াটা বড্ড বেশি লিখেছে। একজন লেখক জীবনে একটা কি বড় জোর দুটো লিখবে। ভাল লিখবে যাতে হাজার বছর টেঁকে সে লেখা। এত গাদা গাদা লেখার দরকার কি? বিশেষত অনুপ্রেরণাহীন অর্ডারি লেখা লিখেছ তো ব্যাস। মাথা থেকে বেরুবে খড় বিচুলি। যতই চিবাও কোন রস নেই। যেমন তোমার এই “মহাকবি কালিদাসের” লেখা রঘুবংশম। রদ্দি মাল। আসলে দরকার হল অনুপ্রেরণা, ইনস্পিরেশান।

বাহ দারুন বলেছেন তো বড়দা। আপনিও লেখক নাকি? এত সুন্দর কথা বলেন?

আমায় চেনো নি বুঝি? অবিশ্যি তখনকার দিনে ঘটা করে বই-এর সাথে বই-এর লেখক এর ছবি ছাপত না। আর ব্যক্তিগত সাক্ষাৎকার, রীডিং সেশান এসবও ছিল না। তাই, না চেনাই স্বাভাবিক। আমি একটা বিশাল মহাকাব্য লিখেছি। বহু বছর ধরে সেটা বেস্ট সেলার।

উরিব্বাস। অমন একটা লেখার ইনস্পিরেশানটা কি ছিল দাদা?

আমার ব্যাপারটা খুব নাটকীয়, ড্রামাটিক। আমি টীন-এজ বয়সে বিশাল বড় “পাড়ার দাদা” ছিলাম। গ্যাং লিডার। এলাকায় তোলা তুলতাম, চুরি ছিনতাই করতাম। তখন আমার নাম রত্নাকর। সে নামে সবাই থরহরি কম্পমান। তারপর কি করে একটা বয়সের সঙ্গে সঙ্গে মনটা নরম হয়ে গেলো। ওসব বাজে কাজ ছেড়ে দিলাম। নামটাও এফিডেভিট করে বদলে বাল্মিকী হলাম। গানটান করতাম। একদিন স্নান করতে গেছি। দেখি কি? একটা ক্রৌঞ্চ মানে সারস আর কি। জলে নেমে একটা সারসীর সাথে একটু ইয়ে ইয়ে করছিল। মানে ফোরপ্লে আর কি, বুঝলে না? হঠাৎ এক ব্যাটা আকাট মুখ্যু ব্যাধ তীর মেরে মদ্দা পাখিটাকে মেরে দিল। বললে বিশ্বাস করবে না, তার মেয়ে বন্ধুটিও বয় ফ্রেন্ড-এর শোকে খুব কান্নাকাটি করতে করতে আত্মহত্যা করল। আমি স্নান করতে নেমে নিজের চোখে সে দৃশ্য দেখলাম। সেই করুণ দৃশ্য দেখে চোখে জল এসে গেল। কিভাবে নিজের অজান্তেই রচনা করে ফেললাম একটা শ্লোক...”মা নিষাদ প্রতিষ্ঠা…” ঐটাই আমার লেখা রামায়নের প্রথম শ্লোক। আমি আদি কবি বাল্মিকী। দাঁড়াও তোমার জন্য আমার প্রথম শ্লোকটা বাঙলায় তর্জমা করে দিই। তোমার বুঝতে সুবিধে হবে।

“অসতর্ক মিথুনরত প্রেমিকবরের প্রাণটি চুরি করে
অয়ি আর্য, তুমি শান্তি পাবে না অনন্তকাল ধরে”

আহা, সুন্দর, অদ্ভুত। দাদা আপনার দেখা পাব ভাবি নি। এ যে আমার পরম সৌভাগ্য। বেড়ে লিখেছেন কাব্যখানা। আমি পড়েছি। একদম খাস্তা মুচমুচে। কিন্তু আপনি তো দাদা এ জামানার নন? দাদা, ও দাদা, নখ খুঁটছেন কেন? বলছি আপনি তো অনেক আগেকার মানুষ?

অ্যাঁ, কি বলছ? ও আমি? হ্যাঁ, সে অনেক কাল আগে। নয় নয় করেও হাজার তিনেক বছর হবে। তবে কিনা আমি যোগবলে ত্রিকাল, ত্রিলোকের যেকোন জায়াগায় যেতে পারি। তুমিও তো দেখছি বাপু এ জামানার নও। হাজার দুয়েক বছর পরের মানুষ। তুমি এলে কি করে এখানে?

হ্যাঁ, আমি ভানু সিংহ। বিংশ শতাব্দি। কিন্তু আপনি জানলেন কি করে?

এই যে নখে আমার একটা আয়না আছে - নখ দর্পণ। আসলে আমি নখ খুঁটছিলাম না। তোমার পরিচয়টা একটু দেখে নিচ্ছিলাম। তুমি এলে কি করে এখানে? তুমিও যোগ টোগ করো নাকি।

আমি টাইম ট্র্যাভেল করে এসেছি। এখন থেকে হাজার তিনেক বছর পর মানুষ সেই কৌশলটি আয়ত্ত করে ফেলেছে।

কিন্তু তোমায় যেন দেখলাম হাজার দুয়েক বছর পরে এসেছ। নাকি ভুল দেখলাম। অনেকদিন নখটা পরিষ্কার করা হয় না। কি দেখতে কি দেখলাম?

না না দাদা, আপনি ঠিকই দেখেছেন। আপনার নখ একদম নির্ভুল। আসলে একটু ঘুর পথ নিতে হয়েছে। মহাকবির সাথে দেখা করতে হাজার খানেক বছর ভবিষ্যতে গিয়ে ওই টাইম ট্র্যাভেল টেকনোলজি ব্যাবহার করে তবে আসতে পারা।

বেশ বেশ। তুমি তো দেখছি বেশ বিখ্যাত। অনেক পুরস্কার টুরস্কার-ও পেয়েছ। এই পুরস্কারটা নিয়ে খুব হইচই দেখছি। নোবেল না কি?

না দাদা, আপনার কাছে আমি কিসসু না। হাতির কাছে পিঁপড়ে। নোবেল হল আমাদের জামানার সেরা পুরস্কার। প্রথমে তো আমার লেখা কেউ পড়ত না। পরে যবন ভাষায় অনুবাদ করে ওই পুরস্কারটা পেয়ে গেলাম। তখন দেশের লোকেরা আমায় মাথায় তুলে নাচানাচি করতে লাগল। বাঙালি বিশ্ববিধাতার এক আশ্চর্যতম সৃষ্টি। বুঝলেন না। ভাল করেছেন আপনি বাংলায় লেখেন নি। নোবেল না পেলে আপনাকেও কেউ পুঁছত না বাঙলায়।

বটে। কিন্তু তুমি বাপু তোমার ওই নোবেলটি একটু সামলে রেখো, মানে তোমার সাগরেদদের সামলে রাখতে বোলো। আমার নখদর্পণ বলছে ওটা কোন উর্বর মস্তিষ্ক বাঙালি পরবর্তী কালে ঝেঁপে দেবে। তবে সে ঘটনাটি বোধ হয় তোমার জীবন সীমার বাইরে। যাকগে যাক। তা তোমার লেখা দু একটা পাঠিও। পড়ব। কটা লেখা বেরিয়েছে এখনও অব্দি?

আজ্ঞে সে বললে আপনি খুব রাগ করবেন। অনেক লিখে ফেলেছি। আসলে কি করব? কিছুই করার থাকে না যে। জমিদারি টমিদারি আমার দ্বারা হয় না। ও সব দাদারাই সামলায়। সকলের ছোট ভাই। তাই সাত খুন মাপ। তা লিখেছি বলতে, এই ধরুন এক ডজন উপন্যাস, বেশ কিছু ছোট গল্প, হাজার তিনেক গান, ডজন দুয়েক কাব্য গ্রন্থ, কিছু প্রহসন, গীতিনাট্য, নাট্যকবিতা…

থামো, থামো, থামো। মাথাটা কেমন ঝিম ঝিম করছে ভাই। যাকগে যাক। অন্য কথা বলি। একটা কথা কি জানো, লেখক যদি তারিফ পাওয়ার জন্য লেখে সে লেখার ষোল আনাই ফাঁকি। নিজের খুশিতে নিজের মনের কথাটি লেখার জন্য পেন ধরলে তবেই ওই কি যেন বললে “রসোত্তীর্ণ লেখা” বেরোয়। তোমার কি মত এ ব্যাপারে?

হ্যাঁ দাদা। একদম একমত। আমি তো সম্পুর্ণ নিজের খুশিতে লিখি। সব যে ছাপাই তাও নয়।

বেশ, বেশ। যাক কথা বলতে বলতে আমরা প্রায় পৌঁছে গেছি। ওই যে সূর্যতোরণ দেখা যায় ওইটে উজ্জয়িনী। তা নখ দর্পণে তোমার যে ছবি দেখলাম তাতে যেন তোমার আমার মতই বড় বড় দাড়ি দেখলাম। তুমি তো দেখছি রীতিমত ক্লীন শেভড। এমনটা কেন দেখলাম, তাই ভাবছি?

দাড়ি, দাড়ি তো আমি রাখি না বড়দা। আপনি কি অন্য কারু ছবি...?

-----

রবি, রবি, ওঠ। আর কতখন ঘুমুবি? কটা বাজে জানিস? আমাদের বজরার ডেকে গিয়ে দেখ, কেমন বৃষ্টি পড়ছে। আজ মেঘনা পেখম তোলা ময়ুরের মতই সুন্দর।

“এ হে, এতো দেরি হয়ে গেলো? আসলে কাল একটু রাত করে লিখছিলাম।” রবি উঠে কয়েক দিনের না-কাটা দাড়িতে হাত বোলায়। পাশে খোলা তার খেরো খাতা। তার পরের কাব্যগ্রন্থ মানসীর গুটি কতক কবিতা তাতে লেখা। কাল আষাঢ় মাসের পয়লা তারিখে মেঘনা বক্ষে ঝুম বৃষ্টি দেখতে দেখতে খুব মনে পড়ছিল তার প্রিয় লেখক মহাকবি কালিদাসের অমর কাব্য মেঘদুতের সেই বিখ্যাত লাইন “আষাঢ়স্য প্রথম দিবসে মেঘমাশ্লিষ্ট সানু…”

তাই কবি কালিদাসের সম্মানেই চার লাইন লিখে ঘুমিয়ে পড়েছিল সে।

কবিবর, কবে কোন্‌ বিস্মৃত বরষে
কোন্‌ পুণ্য আষাঢ়ের প্রথম দিবসে
লিখেছিলে মেঘদূত! মেঘমন্দ্র শ্লোক
বিশ্বের বিরহী যত সকলের শোক

পেনটা তুলে নিয়ে পরের চারটে লাইন লিখতে গিয়ে হঠাৎ গত রাতের স্বপ্নের কথা মনে পড়ে থমকে গেলো রবি।

“স্বপ্নে মহাকবি বাল্মিকী বললেন যেন আমার বড় বড় দাড়ি দেখেছেন। দাড়িটা রেখেই দেখব নাকি? অত বড় একজন কবি বলেছেন যখন সে কথা আদেশ বই তো নয়। তায় আবার ভদ্রলোক ত্রিকালদ্রষ্টা। ঠিকই দেখেছেন নিশ্চয়ই। এ আদেশ শিরোধার্য। এখন থেকে দাড়িটা শিরে ধারণ করেই দেখি কেমন লাগে আমাকে।”

Wednesday, March 8, 2017

"মেখলা তুমি" আর "স্বাধীনাকে"

শুন্য তাপাঙ্ক ওয়েবজিনে মার্চ, ২০১৭ সংখ্যায় প্রকাশিত। লিঙ্কটি আমার পাঠকদের জন্য শেয়ার করলাম।

তোকে জ্যোৎস্না জলে ভেজাব বলে আজও চাঁদ হয়ে উঠি
                                              আকাশেতে
মানুষ নয়, অন্য কোনো শরীর নিয়ে কতবার সাজিয়েছি ঘুঁটি
                                             তোর শরীর পেতে...

পুরোটা পড়তে এই লিঙ্কটিতে যাবেন।

"মেখলা তুমি" আর "স্বাধীনাকে"

Friday, March 3, 2017

ভুতদেখা


সন্ধ্যার অন্ধকারে বারান্দায় দাড়িয়ে সিগারেট টানছিলাম
আর হিসেব করছিলাম,
বোনাসের টাকা দিয়ে গাড়িটা বদলানো যায় কিনা।
হঠাত ভুত দেখলাম, হ্যাঁ, ভুত, আমারি ভুত
ভুত মানে তো অতীত, আমার অতীত -
বিশ বছর আগের আমি, ওর হাতেও সিগারেট
আমার হাতে ক্লাসিক মাইল্ড, ওর হাতে সস্তা কি একটা, নাম ভুলে গেছি
ভুত দেখে ভয় পেতে হয়, তাই একটু পেলাম
কিন্তু পরক্ষনেই উপলব্ধি করলাম ভয়টা আমার নয় ভুতেরই পাওয়া উচিত
সামনে যে ভুত টা দাড়িয়ে আছে, আমার ভুত, ওটা তো একটা রোমান্টিক ফুল
স্বপ্ন দেখে শ্রেনিহীন সমাজ পত্তনের, স্বপ্ন দেখে মুক্তির
শোষণ থেকে মুক্তি, অনাবশ্যক শাসন থেকে মুক্তি
অশিক্ষা থেকে মুক্তি, বৈষম্য সৃষ্টি করা শিক্ষাব্যাবস্থা থেকে মুক্তি
ক্ষুধার থেকে মুক্তি, ক্ষুধিত পাষাণদের থেকে মুক্তি
আমি চল্লিশ বছরের সফল পোড় খাওয়া বেসরকারি সংস্থার চাকুরে
আমি স্বপ্ন দেখি না, হিসেব করি
চুলচেরা হিসেব করে নিজের মুল্য বৃদ্ধি করি, 
দেশেরও করি, বলে কমপক্ষে মনে করি।

ও কতগুলো বস্তাপচা আবেগপ্রবণ ধারনা নিয়ে দেশোদ্ধার করবে বলে নেমেছিল
ও নিজেকে বিলিয়ে দিতে চেয়েছিল
ক্ষুধার্ত মলিন মানুষের মত দেখতে মানুষেতর কিছু প্রাণীর জীবনে আনতে চেয়েছিল আলোকবর্তিকা
কিন্তু সমাজের নির্ভুল শৃঙ্খলা, অপ্রতিহত জয়রথ
ওই ভুতের মাথার ভুতটাকে মেরে বানিয়েছে আজকের এই মানুষটাকে
আমিও বিলোই কিন্তু মেপে,, সমাজসেবি সংস্থায় আমার ডোনেশান যায়
তফাত এটুকু যে নিজেকে বিলিয়ে দিই না
আমার আর আমার পরিবারের সামাজিক মর্য্যাদা বজায় রেখে দিই-থুই,
সত্যি কথা বলতে কি, আমার ডোনেশান-ও আমার
স্ট্যাটাস রক্ষার প্রয়াসেরি অংশবিশেষ।

ও বিপ্লব করতে চেয়েছিল
এই কপটচারি সমাজ যেটা, ছোটলোক আর বড়লোকের মধ্যে
পুরু কাচের দেওয়াল তুলে রেখে দারিদ্রকে মহান করতে কুমির কান্না কাঁদে
সেই নিঃশঙ্ক পদ্ধতিকে ভেঙ্গেচুরে নতুন করে গড়তে চেয়েছিল
ও বিত্তহীনদের অর্থহীন করে রাখার প্রকান্ড ষড়যন্ত্রের 
হাটে হাড়ি ভাঙবার কথা ভেবেছিল
কিন্তু সে ভুতটা মরে গেছে, মরে এই মানুষটা হয়েছে
গভীরে কোথাও এই সফল মানুষটা বিশ্বাস করে 
ওই পুরু কাচের দেওয়ালটা খুব কাজের
কাচের দেওয়ালটার ওদিকে খুব গোলমাল, রুষ্টতা, রিক্ততা, মরুঝড়
সেই বিশৃঙ্খলাকে আলিঙ্গন করব, তেমন মনের জোর কই
অর্থসামর্থ যত বেড়েছে, ব্যাস্তানুপাতিকভাবে কেড়ে নিয়েছে মানসিক সামর্থ
তাই বিপ্লব আমিও করি কিন্তু প্রধানত ফেসবুকে
ভণ্ড সমাজ ব্যাবস্থা, প্রতিকারহীন বিচারব্যাবস্থার বিরুদ্ধে গর্জে উঠি, ফেসবুকে।

আমার ভুতটা যতই গর্জাক কাচের ওপারে ঝড়ে দাঁড়িয়ে
আমি জানি ভুতগুলো মরেই হয়েছে কাচের এপারের মানুষগুলো
মৃত্যুর মতই দুর্ভেদ্য এই দেওয়াল, ও ভাঙতে পারবে না আমরণ
আর ভুত মরে মানুষ হবে
রোদ্দুর জল ঝড় পেছনে রেখে আসবে এধারে এই শীততাপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে

তাই ভয় আমার নয়, আমার ভুতেরই পাওয়ার কথা
ওর আছে মন, আমার আছে বুদ্ধি
ওর আছে নীতি, আমার কুটনীতি
ওর আছে প্রাণের বন্ধু, আমার আছে প্রভাবশালী বন্ধু
ওর আছে বিস্মিত প্রাণ, আমার আছে হিসেবি মন
ওর আছে শেকল ভাঙার অভিলাষ, আমার আছে নিজেকে শৃঙ্খলিত করার মনোবল


আমি নিশ্চিত আমি স্বল্পায়াসেই এই ভুতটাকে মেরে ফেলতে পারব
আর তাতে আমার সমাজ, আমার মত দেওয়ালের এধারে থাকা সফল প্রবীণ মানুষেরা
আমায় সাহায্য করবে -
প্রাণপণ।


জীবন খাতার

সব ব্যক্তিগত মুহূর্ত বাজারি হয়েছে ফেসবুকের পাতায়

আর বাজারি হয়েছে আমার সুন্দরী কবিতারা

নিয়ন লাইটের আলোয় ঝলমলে শাড়ি পরে আমার দেওয়ালে দাঁড়ায়

আর লাইক খোঁজে তারা

Thursday, February 23, 2017

আমার তুমি

তুমি দুর আকাশে ঝিনুক হয়ে ফোটো
        আমি ঘুম চোখেতে বিভোর হয়ে দেখি
তুমি শিউলি ফুলে শিশির হয়ে ভেজো
        আমি তোমার গন্ধ শরীর জুড়ে মাখি

তুমি ঢেউ হয়ে এসে আছড়ে গায়ে পড়ো
        আমি নিষ্ঠুর সেই আঘাত বুকে পাই
তুমি ভিজিয়ে দিয়ে আবার ফিরে যাও
        আমার একলা বিকেলে তোমার প্রতিক্ষাই

তুমি আকাশ জুড়ে বৃষ্টি হয়ে ঝরো
         আমি মাতাল হয়ে দু চোখ বুজে ভিজি
তুমি দুর পাহাড়ে অলকানন্দা হও
         আমি অধীর হয়ে উৎসখানি খুঁজি

তুমি মেঘ-চুলেতে কলাবতি ফুল গোঁজো
        আমি ঐ মেঘের দেশে হারিয়ে যেতে চাই
তুমি পুর্ণিমাতে জোৎস্না হয়ে জোটো
        আমি প্রাণের পরে স্পর্শ তোমার পাই

তুমি নীল শরীরে শঙ্খিনি সাপ হও
        আমি ছোবল পেতে জিভ এগিয়ে দিই
তুমি শীতের দুপুরে কুসুম গরম রোদ
       মেখলা, আমি মাদুর পেতে গা এলিয়ে দিই



Thursday, February 16, 2017

Ahalyake



Aaj Hemanto.
Mahananda nodir ghate phute ache ghentu ful,
Onadrita ;
Ekta titir pakhi tar osthir danay
Paronto bikeler bishanno kamla mekhe path bhul,
Otondrita;
Nadir jole pa dubiye ekla bose, Mekhla, tomar komor charano chul,
Aaj tumi bibahita ;
Aaj tomar aayoto duti chokh kanna dhudhul.
Ogo Obohelita,
Tomar chokher bhasha bojheni jejon
Tomate tobu tari aaj purna odhikar.
.
Sedin chilo Phalgun.
Sedin tomar narom angul chuyechilo amar angul,
Dure suknar jangole ghore phera pakhider gaan aar ajosro kurchi phul,
Onaghrata;
Sei bikele amar chokhe mahananda tobu oi chokhete swapno bipul.
Ei ghate bose, tumi, ami na-bala-kotha aar
Angul choya mukhar neerabata;
Tumi bagdatta, byathita, bhita, tabu bujhi ba madhur proteekkhay
Onagato , ochena se kar chokher bhasha parbar.
.
Hemonter himel haoya hoye aaj jodi kache asi,
Abar jodi bhalobasi
Mekhla, tomar meghla chule jorai jodi bon dhutro phul
Ei surjo-neva-rate jwalte paro praner pradeep amar sathe? Hote paro..
Kolonkita?
Aaj kharosrota, bhangon-piyasee mahanandar ghate
Bhangte paro tomar mithye sajano sangsar?

অহল্যাকে



আজ হেমন্ত।
মহানন্দা নদীর ঘাটে ফুটে আছে ঘেঁটু ফুল,
অনাদৃতা;
একটা তিতির পাখি তার অস্থির ডানায়
পড়ন্ত বিকেলের বিষণ্ণ কমলা মেখে পথ ভুল,
অতন্দ্রিতা;
নদীর জলে পা ডুবিয়ে একলা বসে, মেখলা, তোমার কোমর ছড়ানো চুল।
আজ তুমি বিবাহিতা;
আজ তোমার আয়ত দুটি চোখ কান্না ধুধুল।
ওগো অবহেলিতা,
তোমার চোখের ভাষা বোঝেনি যে জন
তোমাতে তবু তারই আজ পূর্ণ অধিকার।
.
সেদিন ছিল ফাল্গুন।
সেদিন তোমার নরম আঙুল ছুঁয়েছিল আমার আঙুল,
তবুও সেদিন অপরিচিতা;
দুরে সুকনার জঙ্গলে ঘরে ফেরা পাখিদের গান আর অজস্র কুরচি ফুল,
অনাঘ্রাতা;
সেই বিকেলে আমার চোখে মহানন্দা, তবু ওই চোখেতে স্বপ্ন বিপুল।
এই ঘাটে বসে তুমি, আমি, না-বলা-কথা আর
আঙুল ছোঁয়া মুখর নীরবতা;
তুমি বাগদত্তা, ব্যথিতা, ভীতা তবুও বুঝি বা প্রতীক্ষায়
অনাগত, অচেনা সে কার চোখের ভাষা পড়বার !
.
হেমন্তের হিমেল হাওয়া হয়ে আজ যদি কাছে আসি,
আবার যদি ভালবাসি
মেখলা, তোমার মেঘলা চুলে জড়াই যদি বন ধুতরো ফুল
এই সূর্য-নেভা-রাতে
জ্বালতে পারো প্রাণের প্রদীপ আমার সাথে?
হতে পারো কলঙ্কিতা?
আজ খরস্রোতা, ভাঙন-পিয়াসী মহানন্দার ঘাটে
ভাঙতে পারো তোমার মিথ্যে সাজানো সংসার?

Wednesday, February 15, 2017

Tomay Aro ekbar

Shaolar gondher moto nistej ek dupurbela
Rupnaraner ek nirjon baluchore
Ekta chatim gacher chayay
Tomar kol khana mathar balish korechi
Tomar bheja shorirer chayay dariye bhijechi
Se bohukaal holo
.
Tarpor bohubar oi baluchor, ei baluchor
Biddhongsi bonyay bheseche
Sei nistej shaola gondha dupurgulo
Aaj narokeeyo akroshe bish niswas phele
Aaj preter moto amar khudito sheetol uposthiti
.
Sei chatim gach khana govir sushupti niyeche
Noditao onek pa sore geche
Tobu aaj ekta jol chithi ese bole gelo
Rupnaraner jole ekhono mishe ache tomar oshanto chumbon
.
Tai aajo biswas kori
Aaro ekbar ekta shantir dupur pabo
Aaro ekbar tomar mayabi uposthiti rokte chorabe unmadona
Aaro ekbar tomar chokher shantituku shushe shranti metabo
Aaro ekbar manush habo.

Haboi.

Tuesday, February 14, 2017

তোমায় আরও একবার



শ্যাওলার গন্ধের মত নিস্তেজ এক দুপুরবেলা
রূপনারাণের এক নির্জন বালুচরে
একটা ছাতিম গাছের ছায়ায়
তোমার কোলখানা মাথার বালিশ করেছি;
তোমার ভেজা শরীরের ছায়ায় দাঁড়িয়ে ভিজেছি,
সে বহুকাল হল।
.
তারপর বহুবার ওই বালুচর, এই বালুচর
বিধ্বংসী বন্যায় ভেসেছে;
সেই নিস্তেজ শ্যাওলা গন্ধা দুপুরগুলো
আজ নারকীয় আক্রোশে বিষ নিশ্বাস ফেলে;;
আজ প্রেতের মত আমার খুদিত শীতল উপস্থিতি।।
.
সেই ছাতিম গাছখানা গভীর সুষুপ্তি নিয়েছে
নদীটাও অনেক পা সরে গেছে
তবু আজ একটা জল চিঠি এসে বলে গেল -
রূপনারাণের জলে এখনও মিশে আছে তোমার অশান্ত চুম্বন।
.
তাই আজও বিশ্বাস করি
আরও একবার একটা শান্তির দুপুর পাব
আরও একবার তোমার মায়াবি উপস্থিতি রক্তে ছড়াবে উন্মাদনা।
আরও একবার তোমার চোখের শান্তিটুকু শুষে শ্রান্তি মেটাব;
আরও একবার মানুষ হব।
হবই।।

হ্যাপি ভ্যালেন্টাইন্স ডে!!!

Monday, February 13, 2017

শ্বাসকষ্ট

পৃথিবীর তাবড় তাবড় পরিবেশবিদদের ডেকে আনা হয়েছে। সাত দিনের চিন্তন শিবির খোলা হয়েছে। বিষয় পরিবেশ দুষণ নিয়ন্ত্রণ করা। পরিসংখ্যান বলছে গত এক সপ্তাহে কোটি কোটি ভারতবাসী শ্বাসকষ্টে ভুগছে। দু চারটে শ্বাসকষ্টে মৃত্যুর খবর-ও পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু সেগুলোর সত্যতা যাচাই করা যায় নি। কিন্তু হঠাৎ কি করে বাতাসে এতটা দুষণ এল তার কারণটা খুঁজে বের করতে বড় বড় বিজ্ঞানীরা শক্ত শক্ত অঙ্ক কষছে আর দাঁড়ি চুলকোচ্ছে। ওজোন স্তরেই কি ছিদ্র হল না কি ফসিল ফুয়েল পোড়ানোর জন্য বাতাসে কার্বন কণার পরিমাণ বৃদ্ধি সেই নিয়ে জোরদার তর্ক লেগেছে। কেউ কেউ ম্যাটল্যাব সিমুলেশান বানিয়ে গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর প্রভাব প্রেডিক্ট করার চেষ্টা করছে। কেউ বা হ্যাডুপ ব্যাবহার করে একটা বিগডাটা ডাটাবেসে-এ বিশ্বের শেষ এক হাজার বছরের আবহাওয়া আর জলবায়ুর ডাটা ফীড করে হিউমিডিটি লেভেল-এর ওপর প্রেডিক্টিভ অ্যানালিসিস জব চালাচ্ছে। রাজনীতিকরা সব বলছে “এই নাকি আচ্ছে দিন?” এই দুষিত বাতাসের জন্য RAW পাকিস্তান অ্যাংগলটাও খতিয়ে দেখছে। কিছুতেই বোঝা যাচ্ছে না বাতাস হঠাৎ এত ভারী আর আর্দ্র হয়ে যাওয়ার কারণটা ঠিক কি? কেন শ্বাস নিতে গেলেই মনে হচ্ছে বাতাসে অক্সিজেন-এর সঙ্গে কি যেন মিলিয়ে দেওয়া হয়েছে। শেষমেষ একটা চ্যাঙড়া ছোঁড়া, সে কয়েকদিন যাবৎ এক ক্ষীণকটি সুন্দরীর বাড়ির সামনে ঘোরাঘুরি করছে কিন্তু ঠিক লাইন করতে পারেনি, সে বললে “আপনারা দেখছি বড়ই বেবুক। আমি জানি কি হয়েছে। সক্কলে সমস্বরে বলল “কি, কি, কি হয়েছে ভাই?” ছেলেটা বলল “ভয়ের কিছু নেই। সাময়িক সমস্যা। কেটে যাবে। 14th February-r পর। February মাসে রোজ রোজ এই রোজ ডে, টেডি ডে, চকলেট ডে, ভ্যালেন্টাইনস ডে এই সব সাপ-ব্যাঙ দিনের প্রভাবে বাতাসে ভালবাসার পরিমাণ একটু বেড়ে গেছে। তাই বাতাস একটু ভারি আর ভেজা। ভালবাসাটা কর্তব্য হয়ে গেলে সেটা পাপের থেকেও ভারি বোঝা। 14th February টা কেটে গেলেই দেখবেন দখিনা বাতাসের মত ফুরফুরে আর অ্যানুয়াল-পরীক্ষা-শেষ-হওয়া-মনের মত হালকা হাওয়া আবার বইবে।

Friday, February 10, 2017

ষড়যন্ত্র

নতুন দিল্লী থেকে পঞ্চাশ মাইল দুরে একটা আন্ডারগ্রাউন্ড গোপন কক্ষে বসেছে আজ এই মীটিংটা। সর্বোচ্চ স্তরের গোপনীয়তা রাখা হয়েছে পুরো ব্যাপারটায়। গোপনীয়তা রক্ষার সব ব্যাবস্থা সুষমা স্বয়ং তদারকি করে নিয়ে মাথা নাড়লেন হালকা করে। দরজা খুলে দেওয়া হল। এক এক করে ঢুকছেন সকল মন্ত্রীরা আর সর্বোচ্চ পদাধিকারী আই-এ-এস অফিসাররা। তিন তিনটে চেকপয়েন্ট পেরিয়ে আসতে হচ্ছে সকলকে। একটায় বুড়ো আঙ্গুলের ছাপ, পরেরটায় রেটিনা স্ক্যান আর তার পরেরটায় ডি-এন-এ পরীক্ষা করা হচ্ছে। একে একে এসে সবাই নিজের নিজের নির্দিস্ট আসন গ্রহণ করল। রাজু সকলকে সংক্ষেপে বলে দিল আজকের এই টপ সিক্রেট মীটিং-এর আলোচ্য বিষয়খানা। তারপরেই হাতে নমস্কার মুদ্রা নিয়ে তিনি ঢুকলেন। পাজামা, কুর্তা পরিহিত, ট্রিম করা ফ্রেঞ্চ-কাট দাঁড়ি। সঙ্গে সঙ্গে সব গুজগুজ ফিসফিস বন্ধ। গম্ভীর স্বরে বললেন


মিত্রঁ, আজকে আপনাদের এখানে আসার মহত্মপুর্ণ কারণ নিশ্চয়ই রাজু আপনাদের জানিয়েছে। মাথা নাড়ে সবাই। পরিকল্পনাটা সার্থক করতে আপনাদের কাউকে কাউকে হয়তো প্ল্যানটা না জেনেও কিছু কিছু কাজ অলরেডি করতে হয়েছে। রাজু সব রেডি তো?


হ্যাঁ, দাদা। সব ব্যাবস্থা হয়ে গেছে।


যাচ্ছেন যে সে খবর পাক্কা?


হ্যাঁ, দাদা। শতকরা একশ ভাগ নিশ্চিত। আমরা এয়ার ইন্ডিয়ার সাথে কনফার্ম করেছি।


হুমম, কটার ফ্লাইট?


দাদা, পরশু..দিল্লী থেকে উড়বেন রাত নটায়। সিধে ডি সি।


গুড। সুষমা? পাসপোর্ট -এর ব্যাপারটা?


ইয়েস স্যার। সব ব্যবস্থা হয়ে আছে। আমরা “ছেলে পাঠিয়ে” আসল পাসপোর্টটা বদলি করে সে জায়গায় জাল পাসপোর্ট রেখে দিয়েছি। দিল্লী থেকে উনি খেচর হলেই পাসপোর্ট বিভাগে আমাদের চর পাসপোর্টটাকে ইনভ্যালিড বলে ঘোষণা করবে।


আমাদের হাতে কত সময় আছে?


স্যার, মাস তিনেকের বেশি ইনভ্যালিড রাখতে পারা খুব মুস্কিল?


“তিন মাস। হুমম। ওটাকে ছয় করার চেস্টা করুন। আর ওদিকে?” রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইংস -এর প্রধান-এর দিকে তাকান তিনি।


আমরা সব রকম চেস্টা করছি স্যার। ওনার একটা ছবি আর ওনার আঁকা একটা ছবি দেওয়া হয়েছে প্রেসিডেন্টকে। আমাদের গুপ্তচর কনফার্ম করেছে যে প্রেসিডেন্ট অনেকক্ষন ধরে ছবি দুটো দেখেছেন। মহিলাদের ওপর ওনার আবার চিরকাল-ই একটু ব্যথা। So we think we are on target, sir.


গুড। ওনার তো তৃতীয় পক্ষ আছে। চতুর্থ নেবেন? কি মনে হয়? আমাদের শুধু তিন মাস সময় আছে এই সম্পর্কটা দাঁড় করানোর জন্য।


স্যার, সাধ্য মত চেস্টা চালাচ্ছি। মেলানিয়া যাতে ওনাকে সতীন বলে মেনে নিতে পারে তার জন্য আমাদের বেস্ট ম্যান মনবীরকে লাগিয়েছি।


গুড। গুড। পুরো ব্যাপারটার গোপনীয়তা যেন সর্বোচ্চ স্তরে থাকে।


অরুণ বলল “দাদা, বিমুদ্রিকরণ-এর থেকেও বেশী গোপন রাখা হচ্ছে।”


এতক্ষণে হাসি ফোটে তাঁর মুখে। বলেন “রাজু, তাহলে কি মনে হয়, প্রেসিডেন্টের সাথে ওনার বিয়েটা হয়ে উনি ওখানেই সেটল করে গেলে, মমতাহীন অখিল ভারতে আমাদের জয়ধ্বজা ওড়াতে পারবো?”


“দাদা, অখিল ভারত দখলের পথে একটাই বাধা - অখিলেশ।” বললেন রাজনাথ।

“ও নিয়ে ভেবো না। মোলায়েম করে ওর পেছনে হাতা দেওয়ার জন্য ওর বাবা মুলায়মকে নিয়েছি টীমে।”

Tuesday, February 7, 2017

Omiyor Atmohotya




Kal sondhe thekei omiyo-r mejaj ta khichre ache. Sondhebela pasher barir porashor kaku esechilo. Sathe minio esechilo. Porashor kaku bollo ora kal-i ei bari chere chole jacche. Onar naki delhi transfer hoye geche. Ekmatro minir songoi e paray bhalo lagto omiyor. Besh shushri aar chipchipe. Aar ektu shanto shisto lajuk type. Oder dujoner modhye koto kotha hoy. Local politics theke bollywood porjonto. Minir opor kemon ekta odhikar bodh jonme gechilo omiyor. Ei to sedin ekta party te gechilo, minirao chilo. Oritro bole ekta humdo chele khub dhole dhole kotha bolchilo minir sathe. Ekdom sojhyo hoy ni omiyor. Pore baron-o kore diyechilo mini ke se oi sob adbhat cheleder sathe mishte. Sei minirai kina chole jabe aaj. Aar kono jogajog thakbe na. Bhebe kal rateo lukiye lukiye kedeche se.


Sokal bela uther ektu guti suti mere bose tv te micky mouse-er ekta show dekhchilo omiyo. Ki boka boka golpo? Bhishon biroktikor. Chotokhato bole amader ke eraki bhabe ke jane? Kintu jai hok robbarer sokale chutir mejaj ta ghorer anache kanache falguni haoyar moto ghure beracche. Omit kaku berocche bajare. Kakima chechiye bolche pathar mangsho ta dekhe nio, gelo robbar har-i sar chilo. Ar buro lau ekdom anbe na, anle ota tomar mathate bhangbo. Proti robibar ei ek-i chirachorito chobi. Ki biroktikor? uff...Sobe tv te micky mini ke pake pheleche emon somoy ontu ese kotha nei barta nei bollo “ki mister hulusthulu, Sokal sokal bose bose cartoon dekha hocche..bolei oke ek jhatkay tule niye sofay tar jaygatai dokhol kore boslo. Aar tarpor omiyoke kole bosiye or gale gal ghoste laglo. Ei kole bosa aar ebong gale gal ghose ador ekdom pochondo noy omiyor. Tar thekeo boro byapar ei hulusthulu naam ta motei pochondo noy. Se khelar somoy emon kichu hulusthulu kando kore na je take hulusthulu bole dakte hobe. Ontudar boyos koto aar? saat hobe. Omiyoro boyos noy noy kore pach hoye geche. Ei matro du-ek bochorer boro dadar ei jyathamo motei sojhyo hoy na. Kol theke neme omiyo ek chute nicher ranna ghore. Anu kakima mach bhajche. Ei mach bhajar gondho ta suklei omiyor bhetor ta kemon ekta kore..khub bhalobase o mach bhaja khete. Khub sabdhane pa tipe tipe giye ekta mach bhaja neyar chesta korechilo. Kintu anu kakima dekhte peyei emon tara dilo je oke tor tor kore palate holo. Jak ge jak. Pore nischoi ekta paoya jabe. Ekhon giye kothao khela tela jak. Ranna ghor theke paliye omiyo thakurghore elo. Eta or bhari priyo jayga. Onek interesting jinis ache ekhane porilkha nirikkha kore dekhar jonyo. Thakurer thala glass gulo besh choto choto.Suneche thakur ra naki onek boro hoy. Sara akash jure thake. Kintu oder khabar thala bason eto choto hoy keno bojhe na omiyo. Jakge jak. Se chotokhato manush. Tai ei choto choto thala glass gulo tar pochonder. Se prothomei pere phello prosad rakhar chotto thala ta. Duto nokuldana gole atke chilo. Nokh diye khute kheye phello. kichukhon ota niye khelar por thakurer ekta singhason chilo seita pere phello. Setake niye ulte palte kichukhhon khelar por bore hoye  bhablo jak chade jaoya jak. Thakur ghor theke beronor somoy kandota ghotlo. Hothat kore paye lege thakur ghorer dorjar r kache thaka dami vase ta pore gelo. Songe songe bhenge churchur. Aar jay kothay? Onu kakima chute elo. Se ki bokuni. Ekta duto chor chappor o porlo pechone. Monta bhishon kharap hoye gelo. Sobai kharap. Keu bhalo base na. Omit kaku phire ese bhanga fuldani ta dekhe rege agun. Prochondo bokaboki korlo. Emon ki sasti swarup shobar ghore ek ghonta bodho kore rakhlo. Aar ontuda or bokuni dekhe kina puro time fak fak kore haslo. Omiyo bujhe geche. Se to e barir chele noy. Tai. Ontudar paye lege bhangle ei bhabe bokte, sasti dite parto ora? Kakkhono na. Bolto “kotoi ba boyos. Paye lege pore geche. Chere dao.” take ei e barir boro ra ekta onath ashrom theke niye esechilo or ekdom choto belay. Tarpor theke se ei baritei ache cheler moto. Mukhe jotoi dekhak na keno, era kokhonoi omiyo ke barir chele bhabe na. Tai eirom korte parlo. Dhut, ei onath ashrito marka jibon bachar kono manei hoy na. Tao mini chole jabe aaj. Jeeboner kono mulyoi nei aar. Atmohotya..han atmohotya-i korbe se. Kon ekta cinemay dekhechilo omiyo. Ei to ontudader ei bariTai tetola. Char tolar chad theke jhap dile nischoi morte parbe se. Raagta thakte thaktei korte hobe. Noyto moner jor ta pabe na. Dheer paye siri beye char tolar chade uthe jay omiyo. Chader railing tar opore ek lafe uthe jay. Opor theke nicher rasta ekbar dekhe omiyo. Ki choto choto khude lagche sob kichu. Onu kakimar maar ta mone pore. Omit kakur bokuni ta. Ontur hasi. Minir dholo dholo mukhta. Nah beche thaka mitthe. Morte take hobei. Chokh buje niye jhap diye dey omiyo.


--

Matite porar por bish second moto pore thake. Hmm etokhone nischoi more geche se. Ekbar uthe darate chesta korlei bojha jabe. Ek lafe uthe daray omiyo. Thik bujhte pare na moreche kina. Porikkha korte nijer gaye ekta achor kate. Lagche. Tobe ki se beche ache? Bodh hoy. Hate paye mathay sob jaygay byatha onubhob korar chesta kore. Nah kothao kono byatha nei. “Moron. Aamar moron-o nei. Beral ra bodh hoy jomero oruchi.” mone mone bole omiyo. Aar bhebe ki hobe? Rag tao ebar besh pore eseche. Tai aaj aar chesta kora jabe na. “Jaige, minir sathe ekbar dekha kore asi. manushder facebook er moto beral dero ekta social networking site ache. Kitty book bole. Okhane mini ke ekta account khule die. Tahole or sathe poreo jogajog rakha jabe.” lyaj jhara diye gayer dhulo jhere uthe pore omiyo minir barir dike jay. “Oke bole dite hobe oi humdo hulo oritro tar friend request kitty book e o ekdom accept na kore.” mone mone bhabe se.


End

অমিয়র আত্মহত্যা

কাল সন্ধে থেকেই অমিয়-র মেজাজটা খিঁচড়ে আছে। সন্ধেবেলা পাশের বাড়ির পরাশর কাকু এসেছিল। সাথে মিনিও। পরাশর কাকু বলল ওরা কাল-ই এই বাড়ি ছেড়ে চলে যাচ্ছে। ওনার নাকি দিল্লি ট্রান্সফার হয়ে গেছে। একমাত্র মিনির সঙ্গই এ পাড়ায় ভাল লাগত অমিয়র। বেশ সুশ্রী আর ছিপছিপে। আর একটু শান্তশিষ্ট লাজুক মতন। ওদের দুজনের মধ্যে কত কথা হয়। লোকাল পলিটিক্স থেকে বলিউড পর্যন্ত। মিনির ওপর কেমন একটা অধিকার বোধ জন্মে গেছিল অমিয়র। এই তো সেদিন সে একটা পার্টিতে গেছিল। মিনিরাও ছিল সেখানে। অরিত্র বলে একটা হুমদো ছেলে খুব ঢলে ঢলে কথা বলছিল মিনির সাথে। একদম সহ্য হয় নি অমিয়র। পরে মিনিকে সে ঐ সব আটভাট ছেলেদের সাথে মিশতে বারণ-ও করে দিয়েছিল।  সেই মিনিরাই কিনা চলে যাবে আজ। আর কোন যোগাযোগ থাকবে না। ভেবে কাল রাতেও লুকিয়ে লুকিয়ে কেঁদেছে সে।


সকালবেলা উঠে একটু গুটিসুটি মেরে বসে টিভিতে মিকি মাউস-এর একটা পর্ব দেখছিল অমিয়। কি বোকা বোকা গল্প...কোন মানে হয়? ভীষণ বিরক্তিকর। ছোটখাট বলে আমাদেরকে এরা কি ভাবে কে জানে? আনমনা হয়ে ভাবছিল অমিয়। রবিবারের সকালে ছুটির মেজাজটা ঘরের আনাচে কানাচে ফাল্গুনি হাওয়ার মত তখন ঘুরে বেড়াচ্ছে।  অমিত কাকু বেরোচ্ছে বাজারে। কাকিমা চেঁচিয়ে বলছে “পাঁঠার মাংসটা দেখে নিও, গেল রোববার হাড়-ই সার ছিল। আর বুড়ো লাউ একদম আনবে না, আনলে ওটা তোমার মাথাতে ভাঙব।” প্রতি রবিবার এই এক-ই চিরাচরিত ছবি। কি বিরক্তিকর? উফফ...অমিয় আবার কার্টুনে মনোনিবেশ করে। সবে টিভিতে মিকি মিনিকে কি একটা পাকে ফেলেছে, এমন সময় অন্তুদা এসে, কথা নেই বার্তা নেই, বললো “কি মিস্টার হুলুস্থুলু, সকাল সকাল বসে বসে কার্টুন দেখা হচ্ছে। বলেই ওকে এক ঝটকায় তুলে নিয়ে সোফায় ওর জায়গাটাই দখল করে বসল। আর তারপর অমিয়কে কোলে বসিয়ে ওর গালে গাল ঘষতে লাগল। এই কোলে বসা আর গালে-গাল-ঘষা আদর একদম পছন্দ নয় অমিয়র। সেটা তাও মানা যায় কিন্তু এই হুলুস্থুলু নামটা? মোটেই পছন্দ নয় তার। সে খেলার সময় এমন কিছু হুলুস্থুলু কান্ড করে না যে তাকে হুলুস্থুলু বলে ডাকতে হবে। অন্তুদার বয়স কত আর? সাত হবে। অমিয়রও বয়স নয় নয় করে পাঁচ হয়ে গেছে। এই মাত্র দু-এক বছরের বড় দাদার এই জ্যাঠামো মোটেই সহ্য হয় না। অন্তুদা না হয় ছোটো। সে তো আর ছোটো নয়, রীতিমতো প্রাপ্ত বয়স্ক। কোল থেকে নেমে অমিয় এক ছুটে নিচের রান্না ঘরে। অনু কাকিমা মাছ ভাজছে। এই মাছ ভাজার গন্ধটা শুঁকলেই অমিয়র ভেতরটা কেমন একটা করে..খুব ভালবাসে ও মাছ ভাজা খেতে। খুব সাবধানে পা টিপে টিপে গিয়ে একটা মাছ ভাজা নেওয়ার চেস্টা করেছিল। কিন্তু অনু কাকিমা দেখতে পেয়েই এমন তাড়া দিল যে ওকে তর তর করে পালাতে হল। যাক গে যাক। পরে নিশ্চয়ই একটা পাওয়া যাবে। ও তো আর আদেখলে নয়। এখন গিয়ে কোথাও খেলা-টেলা যাক। রান্না ঘর থেকে বেড়িয়ে অমিয় ঠাকুরঘরে এল। এটা ওর ভারি প্রিয় জায়গা। অনেক ইন্টারেস্টিং জিনিস আছে এখানে পরীক্ষা-নিরিক্ষা করে দেখার জন্য। ঠাকুরের থালা গ্লাস গুলো বেশ ছোট ছোট। শুনেছে ঠাকুররা নাকি অনেক বড় হয়। সারা আকাশ জুড়ে থাকে। কিন্তু ওদের খাবার থালা বাসন এত ছোট হয় কেন বোঝে না অমিয়। যাকগে যাক। সে ছোটখাট মানুষ। তাই এই ছোট ছোট থালা গ্লাস গুলো তার পছন্দের। সে প্রথমেই পেড়ে ফেলল প্রসাদ রাখার ছোট্ট থালাটা। দুটো নকুলদানা গলে আটকে ছিল। নখ দিয়ে খুঁটে খেয়ে ফেলল। নকুলদানা বেশ ভাল খেতে। কিছুক্ষণ ওটা নিয়ে খেলার পর ঠাকুরের একটা সিংহাসন ছিল সেইটা পেড়ে ফেলল। সেটাকে নিয়ে উলটে পালটে কিছুক্ষণ খেলা হল। ঠাকুরের আসনটা গলায় জড়িয়ে আর খুলে আরও খানিকক্ষণ কাটলো। এরপর বোর হয়ে গেলো। বিরক্তিটা আবার ফিরে আসছে। মিনি চলে যাবে। ছাদে যাওয়া যাক। ছাদে গিয়ে মিনিকে ডাকলে নিশ্চয়ই ও ও বাড়ির ছাদে উঠে আসবে। কিন্তু বিধি বাম! ঠাকুর ঘর থেকে বেরনোর সময় কান্ডটা ঘটল। বসার ঘরের মধ্যে দিয়ে ছাদে যাওয়ার সিঁড়ি। হঠাৎ করে পায়ে লেগে বসার ঘরের দরজার সামনে থাকা দামি ফুলদানিটা পড়ে গেল। সঙ্গে সঙ্গে ভেঙ্গে চুরচুর। আর যায় কোথায়? অনু কাকিমা ছুটে এল। সে কি বকুনি! একটা দুটো চড়-থাপ্পড়ও পড়ল পেছনে। মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে গেল। সবাই খারাপ। কেউ ভালবাসে না। অমিত কাকু ফিরে এসে ভাঙ্গা ফুলদানিটা দেখে তো রেগে আগুন। প্রচণ্ড বকাবকি করল। এমন কি শাস্তি স্বরুপ শোবার ঘরে এক ঘন্টা বন্ধ করে রাখলো। আর অন্তুদা ওর বকুনি দেখে কিনা পুরো সময়টা ফ্যাক ফ্যাক করে হাসল? অমিয় বুঝে গেছে। সে তো এ বাড়ির ছেলে নয়। তাই। অন্তুদার পায়ে লেগে ফুলদানি ভাঙলে এই ভাবে বকতে, শাস্তি দিতে পারতো ওরা? কক্ষনো না। বলত “কতই বা বয়স। পায়ে লেগে পড়ে গেছে। ছেড়ে দাও।” অমিয় জানে অনেক ছোটবেলায় তাকে এ বাড়িতে একটা অনাথ আশ্রম থেকে নিয়ে আসা হয়েছিল। সেই থেকে সে এই বাড়িতেই আছে ছেলের মত। মুখে যতই দেখাক না কেন, এরা কখনই অমিয়কে বাড়ির ছেলে ভাবে না। সৎ ছেলে সে। তাই এত বকুনি। অন্তুদারও সৎ ভাই। তাই অমন করে হাসতে পারল সে ওর দুর্দশা দেখে। ধুৎ, এই অনাথ, আশ্রিত মার্কা জীবন বাঁচার কোন মানেই হয় না। তাও মিনি চলে যাবে আজ। জীবনের কোন মুল্যই নেই আর। কার জন্য বাঁচবে সে? কিসের জন্য বাঁচবে?  আত্মহত্যা..হ্যাঁ আত্মহত্যা-ই করতে হবে। কোন একটা সিনেমায় দেখেছিল অমিয়। আত্মহত্যা। এই তো অমিয়দের এই বাড়িটাই তেতলা। চারতলার ছাদ থেকে ঝাঁপ দিলে নিশ্চয়ই মরতে পারবে সে। রাগটা থাকতে থাকতেই করতে হবে। নয়তো মনের জোরটা পাওয়া যায় না। এখনই অন্তুদা কিম্বা অনুকাকিমা এসে আদর করে দিলে রাগটা পড়ে যাবে। দেরি করা যাবে না। ধীর পায়ে সিঁড়ি বেয়ে চার তলার ছাদে উঠে যায় অমিয়। ছাদের রেলিংটার ওপরে ওঠে একটা ছোট্ট লাফ দিয়ে। ওপর থেকে নিচের রাস্তাটা একবার দেখে অমিয়। কি ছোট ছোট খুদে লাগছে সব কিছু। দূর থেকে দেখলে সবই ছোট। না, এসব ভাবলে চলবে না। অনু কাকিমার মারটা মনে পড়ে। অমিত কাকুর বকুনিটা। অন্তুদার হাসি। মিনির ঢলো ঢলো মুখটা। নাহ বেঁচে থাকা অনর্থক। মরতে তাকে হবেই। চোখ বুজে নিয়ে ঝাঁপ দিয়ে দেয় অমিয়। তীব্র গতিতে তার তুলতুলে শরীরটা এসে মাটি ছোঁয়। ধুপ করে একটা শব্দ। তারপর সব চুপ।


--


মাটিতে পড়ার পর বিশ সেকেণ্ড মতো পড়ে থাকে অমিয়। হুমম, এতক্ষণে নিশ্চয়ই মরে গেছে সে। একবার উঠে দাঁড়াতে চেস্টা করলেই বোঝা যাবে। এক লাফে উঠে দাঁড়ায় অমিয়। ঠিক বুঝতে পারে না মরেছে কিনা। পরীক্ষা করতে নিজের গায়ে একটা আঁচড় কাটে। লাগছে। তবে কি সে বেঁচে আছে? নাকি মরা লোকেদেরও ব্যাথা বেদনা থাকে? বেঁচে থাকলে যন্ত্রণা হওয়া উচিত এত উঁচু থেকে পড়লে। হাতে পায়ে মাথায় সব জায়গায় ব্যাথা অনুভব করার চেস্টা করে। নাহ কোথাও কোন ব্যাথা নেই। কিন্তু কেন জানি মনে হচ্ছে সে বেঁচেই আছে।


“মরণ!!! আমার মরণ-ও নেই। বেড়ালরা বোধ হয় যমেরও অরুচি।” মনে মনে বলে অমিয়। আর ভেবে কি হবে? রাগটাও এবার বেশ পড়ে এসেছে। তাই আজ আর চেস্টা করা যাবে না। “যাইগে, মিনির সাথে একবার দেখা করে আসি। মানুষদের ফেসবুক-এর মত বেড়ালদের একটা social networking site আছে। কিটিবুক বলে। ওখানে মিনিকে একটা অ্যাকাউন্ট খুলে দিই। তাহলে ওর সাথে পরেও যোগাযোগ রাখা যাবে।” ল্যাজ দিয়ে গায়ের ধুলো ঝেড়ে অমিয় মিনির বাড়ির দিকে যায়। “ও হ্যাঁ, ওকে বলে দিতে হবে যেন কিটিবুকে ঐ হুমদো হুলো অরিত্রটার friend request একদম  accept না করে।” মনে মনে ভাবে সে।


সমাপ্ত

Friday, February 3, 2017

Hotcchara moneybag



Office jaoyar age nityo naimitto ekṭi ghaṭonake ei mojar choṛaṭay ekṭu dharar cheṣṭa korechi. Apanader sakoler jībonei eṭi kakhono na kakhano ghoṭeche. Tai aaa kari relate korte parben.


Mobile mahashoy baṛo'i sadaśhoẏ,
jakhon darkar hoẏ, ḍaklei diẏe deẏ saṛa
manibyag hatocchaṛa, jodi karecho kachchaṛa,
lukōchuri khele tobe tara
office jaoar kaal, sokkal sokkal,
honye hoẏe tare khunji
er theke sōja kora, sōnar horiṇ dhora
train khana miss holo bujhi
ghoṛi ghoṛi dekhi ghoṛi, baṛighar mathaẏ kori,
kemone paibo tar dekha
hat pa-i holo naki, nei kōtha khōnja baki,
naki śheṣhe mele dilo pakha
baiṭhakkhana ghure khunji take antopure,
snanghare jai tarpore
bujhi ba haralo tabe, “card gulō ki je hobe”,
buk bhoẏe duru duru kore

śheṣhmesh khunjekhaje, sōfar godir khanje
peẏe tare sukhe gaan gai
“naẏon samukhe prabhu thekō, naẏoner kobhu
majhkhane niẏō nakō ṭha̐i”

হতচ্ছাড়া

Office যাওয়ার আগে নিত্যনৈমিত্তিক একটি ঘটনাকে এই মজার ছড়াটায় একটু ধরার চেষ্টা করেছি। আপনাদের সকলের জীবনেই এটি কখনো না কখনো ঘটেছে। তাই আশা করি relate করতে পারবেন।


মোবাইল মহাশয় বড়ই সদাশয়,
যখন দরকার হয়, ডাকলেই দিয়ে দেয় সাড়া
মানিব্যাগ হতচ্ছাড়া, যদি করেছ কাছছাড়া,
লুকোচুরি খেলে তবে তারা
অফিস যাওয়ার কাল, সক্কাল সক্কাল,
হন্যে হয়ে তারে খুঁজি
এর থেকে সোজা করা, সোনার হরিণ ধরা
ট্রেন খানা মিস হল বুঝি
ঘড়ি ঘড়ি দেখি ঘড়ি, বাড়িঘর মাথায় করি,
কেমনে পাইব তার দেখা
হাত পা-ই হল নাকি, নেই কোথা খোঁজা বাকি,
নাকি শেষে মেলে দিল পাখা
বৈঠকখানা ঘুরে খুঁজি তাকে অন্তপুরে,
স্নানঘরে যাই তারপরে
বুঝি বা হারাল তবে, “কার্ড গুলো কি যে হবে”,
বুক ভয়ে দুরু দুরু করে
শেষমেশ খুঁজেখাজে, সোফার গদির খাঁজে
পেয়ে তারে সুখে গান গাই
“নয়ন সমুখে প্রভু থেকো, নয়নের কভু
মাঝখানে নিয়ো নাকো ঠাঁই”

Double Khaoya Daoya



Ogo shuncho, hyaa, ami tomakei bolchi. Boli, ajke baṭi chochchori baniyecho to? Baṭi chochchorir jonyoi aar ekbar tomay biye karte pari.

Hyaa baniẏechi go baniẏechi..Jani na abar. Baṭi cochchori na hole tomar to janmodiner khabar mukhe ruchbe na..Haṛ-mas to sara jībon jaliye khele..

Ki oi vegetable tele naki?

Na go, baba na. ekdam kacchi ghani sarser tele kaachalaṅka chiṛe phoṛan diẏe besh koshiẏe re̐dhechi. Tomar je rakom pachanda.. Khusi?

Bah besh besh..aar alu posto?

Ta'o haẏeche. Tomar aar ajker dine sadh apūrṇo thake keno? Alu kha'oẏa tomar mana. Ta'o banalam..Lobher mathaẏ ek baṭi kheẏe boso na..

Uff, jome jabe ajker kha'oẏaṭa. Bhabte'i parchi na..aar chanar paẏes?

se aar bolte? Chanar paẏes to tomar barabor'i hot favorite..se'i ekush bachor baẏos theke nei ne kore aaj hoẏe gelo churasi. Kono janmodine chanar paẏes paoni, emanṭa hoẏeche? aar aaj to tomar sudhu janmodin noy du-duṭo special occasion. Ta'i chanar paẏes na kore upaẏ ki balo?

Aha oi ekti pod tumi maẏer theke'o bhalo raadho..se'i amar 28 bachar baẏos theke kheẏe aschi. Tabe ajkal teman swaad hoẏ na. Na, na tomar dosh noẏ..sugar-free diẏe chanar paẏes jeno raẏta deoẏa phuchka..

Tumi bapu buṛo bham hoẏe gele. Ta'o nolaṭa ekṭu'o kamlo na. Baccha cheler mato abdar karcho..Jakge jak....aaj besh kore chini diẏe'i tomar pasand mafik paẏes baniẏechi, bujhlen Mister hyangla?

Uff, jibhe jol ese jacche. Chonchone khideṭa'o pacche. Kintu tumi buṛo bham kake balcho hyaa..Gelo sombar parjonto ami du byag bharti bajar niẏe asini?

seṭa kono kr̥ititwer kam'mo noẏ..Paritosh ḍaktar hajar bar baroṇ koreche ato bhari byag bo'ite..

Prati rabibar piklu babuke cycle-e kore ghuriẏe niẏe asina? Tarpar amader bagane or sathe jhaṛa 10 over-er cricket kheli..o choṭo bole or duṭo out-e out hoẏ aar ami oke jetate icche kore out hoẏe jai..sudhu or khusi mukhe “dadu tumi here gecho, here gecho” shonar jan'yo…

humm, bishal bahadurir kaaj karo. e'i baẏose ato douṛjhaap bhalo? accha tumi kon akkele pikluke kaadhe tule gach theke batabi lebuṭa paṛte gele balo to? Jadi poṛe giẏe hat pa bhaṅgte, tahole ki hoto hyaa? se'i to e'i sharmake'i seba shushrusha korte hoto naki?

are ki karbo? Jano to or abdarer kache ami chirokal'i asohaẏ..or mukher khusir jhalakaniṭa dekhar lobhṭa samlate parlam na. Baẏna karlo “dadu, batabi lebu paṛbo chalo na”. Ta'i gelam..anek chesṭa kore'o aakshi diẏe ḍalṭar nagal pelam na..Dadubha'i er mukhṭa choṭo hoẏe gelo. Ta'i bollam “dadu bha'i, tumi amar kaadhe choṛbe ar ami veer hanumaner mato ek laphabo. Tumi chot kore ḍalṭa dhore ṭene anbe niche. Tarpar amra batabi lebuṭa chiṛe niẏe tomar dim'make debo..Dim'ma bhalo kore nun, laṅkar guṛo diẏe mekhe freeze-e rekhe debe..amra sandhebela khabo..Keman idea, dadubha'i?

Khub moja hobe dadu..

Tahale bole da'o batabi lebur engreji aar sanskr̥ito nam ki..Ki sikhiẏechilam?

Dadu, engreji holo grapefruit ar sanskr̥ito haoo...mmm..Madhukarkaṭika.

“That’s my boy” bole oke kaadhe tule laphalam uchu ḍalṭa lokkho kore. Namar somoẏ ekṭu besamal hoẏe gelam. Ta'o dadubha'ike sabdhane kaadh theke namiẏe diẏechilam. Ṭhik ḍalṭa dharte pareni dadubha'i. Ta'i batabi lebuṭa...Buke khub jantroṇa hocchilo. Tomar mukhṭa mone poṛchilo. Dosh diner jan'yo biranabbaiṭa complete korte parlam na. Se jak. ”Janmile marite habe, amor ke kotha kobe”...Bidhan babur shunechi janmodin aar mr̥tiyu din ek'i dine. amar janmodin aar kajer dinṭa ekdine holo. se ek ja hok bhalo'i holo. Double kha'oẏa da'oẏa.




ডাবল খাওয়া দাওয়া

ওগো শুনছ, হ্যাঁ, আমি তোমাকেই বলছি। বলি, আজকে বাটি চচ্চড়ি বানিয়েছ তো?  বাটি চচ্চড়িটার জন্যই আর একবার তোমায় বিয়ে করতে পারি।


হ্যাঁ বানিয়েছি গো বানিয়েছি..জানি না আবার। বাটি চচ্চড়ি না হলে তোমার তো জন্মদিনের খাবার মুখে রুচবে না। হাড়মাস তো সারা জীবন জ্বালিয়ে খেলে..


কি ঐ ভেজিটেবিল তেলে নাকি?


না গো, বাবা না। একদম কাচ্চি ঘানি সর্ষের তেলে কাঁচালঙ্কা ছিঁড়ে ফোড়ন দিয়ে বেশ কষিয়ে রেঁধেছি। তোমার যে রকম পছন্দ।। খুশি?


বাহ বেশ বেশ। আর আলু পোস্ত?


তাও হয়েছে। তোমার আর আজকের দিনে সাধ অপূর্ণ থাকে কেন? আলু খাওয়া তোমার মানা। তাও বানালাম। লোভের মাথায় এক বাটি খেয়ে বোসো না।


উফফ, জমে যাবে আজকের খাওয়াটা। ভাবতেই পারছি না। আর ছানার পায়েস?


সে আর বলতে। ছানার পায়েস তো তোমার বরাবরই হট ফেভারিট। সেই একুশ বছর বয়স থেকে নেই নেই করে আজ আমার হয়ে গেল চুরাশি। কোনো জন্মদিনে ছানার পায়েস পাওনি, এমনটা হয়েছে? আর আজ তো তোমার শুধু জন্মদিন নয় দু-দুটো স্পেশাল অকেশান। তাই ছানার পায়েস না করে উপায় কি বলো?


আহা ঐ একটি পদ তুমি মায়ের থেকেও ভাল রাঁধো..সেই আমার ২৮ বছর বয়স থেকে খেয়ে আসছি। তবে আজকাল তেমন স্বাদ হয় না। না, না তোমার দোষ নয়। সুগার-ফ্রী দিয়ে ছানার পায়েস যেন রায়তা দেওয়া ফুচকা..


তুমি বাপু বুড়ো ভাম হয়ে গেলে। তাও নোলাটা একটুও কমল না। বাচ্ছা ছেলের মত আবদার করছ। যাকগে যাক। আজ বেশ করে চিনি দিয়েই তোমার পসন্দমাফিক পায়েস বানিয়েছি, বুঝলেন মিস্টার হ্যাংলা??


উফফ, জিভে জল এসে যাচ্ছে। চনচনে খিদেটাও পাচ্ছে। কিন্তু তুমি বুড়ো ভাম কাকে বলছ হ্যাঁ? গেল সোমবার পর্যন্ত আমি দু ব্যাগ ভর্তি বাজার নিয়ে আসিনি।


সেটা কোন কৃতিত্বের কম্ম নয়। পরিতোষ ডাক্তার হাজার বার বারণ করেছে অত ভারি ব্যাগ বইতে..


প্রতি রবিবার পিকলু বাবুকে সাইকেলে করে ঘুরিয়ে নিয়ে আসিনা? তারপর আমাদের বাগানে ওর সাথে ঝাড়া ১০ ওভার-এর ক্রিকেট খেলি..ও ছোট বলে ওর দুটো আউট-এ আউট হয় আর আমি ওকে জেতাতে ইচ্ছে করে আউট হয়ে যাই। শুধু ওর খুশি মুখে “দাদু তুমি হেরে গেছো, হেরে গেছো” শোনার জন্য।


হুম, বিশাল বাহাদুরির কাজ করো। এই বয়সে অত দৌড়ঝাঁপ ভাল? আচ্ছা তুমি কোন আক্কেলে পিকলুকে কাঁধে তুলে গাছ থেকে বাতাবি লেবুটা পাড়তে গেলে বলো তো? যদি পড়ে গিয়ে হাত পা ভাঙতে, তাহলে কি হত হ্যাঁ? সেই তো এই শর্মাকেই সেবা শুশ্রুষা করতে হত নাকি?


আরে কি করব? জানো তো ওর আব্দারের কাছে আমি চিরকালই অসহায়..ওর মুখের খুশির ঝলকানিটা দেখার লোভটা সামলাতে পারলাম না। বায়না করল  “দাদু, বাতাবি লেবু পাড়ব চল না”। তাই গেলাম..অনেক চেষ্টা করেও আঁকশি দিয়ে ডালটার নাগাল পেলাম না..দাদুভাই এর মুখটা ছোট হয়ে গেল। তাই বললাম “দাদু ভাই, তুমি আমার কাঁধে চড়বে আর আমি বীর হনুমানের মত এক লাফাব। তুমি চট করে ডালটা ধরে টেনে আনবে নিচে। তারপর আমরা বাতাবি লেবুটা ছিঁড়ে নিয়ে তোমার দিম্মাকে দেব..দিম্মা ভাল করে নুন, লঙ্কার গুঁড়ো দিয়ে মেখে ফ্রীজে রেখে দেবে। আমরা সন্ধেবেলা খাব। কেমন আইডিয়া, দাদুভাই?


খুব মজা হবে দাদু..


তাহলে বলে দাও বাতাবি লেবুর ইংরেজি আর সংস্কৃত নাম কি..কি শিখিয়েছিলাম?


দাদু, ইংরেজি হল গ্রেপফ্রুট আর সংস্কৃত হল...উমম...মধুকর্কটিকা।

“That’s my boy” বলে ওকে কাঁধে তুলে লাফালাম উঁচু ডালটা লক্ষ করে। নামার সময় একটু বেসামাল হয়ে গেলাম। তাও দাদুভাইকে সাবধানে কাঁধ থেকে নামিয়ে দিয়েছিলাম। ঠিক ডালটা ধরতে পারেনি দাদুভাই। তাই বাতাবি লেবুটা...বুকে খুব যন্ত্রণা হচ্ছিল। তোমার মুখটা মনে পড়ছিল। দশ দিনের জন্য বিরানব্বইটা কমপ্লিট করতে পারলাম না। সে যাক। ”জন্মিলে মরিতে হবে, অমর কে কথা কবে”। বিধান বাবুর শুনেছি জন্মদিন আর মৃত্যু দিন একই দিনে। আমার জন্মদিন আর কাজের দিনটা একদিনে হল। সে এক যা হোক ভালই হল। ডাবল খাওয়া দাওয়া।

ফেসবুক পেজ